ভূমিদস্যু ও জলদস্যুদের থাবা থেকে ভিটেমাটি রক্ষায় মানববন্ধন ও স্বারকলিপি প্রদান
জুয়েল চোকদার :
চিহ্নিত ভূমিদস্যু ও জলদস্যুদের কালো হাত থেকে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার আধারা ইউনিয়নের কালিরচর গ্রাম রক্ষায় জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনায় মানববন্ধন ও স্মারকলিপি পেশ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে ‘কালীরচর যুব ও ছাত্র সমাজ’ এর ব্যানারে জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণের সামনের সড়কে মানববন্ধন কর্মসূচি হয়। এতে বিভিন্ন বয়সী শতাধিক ব্যক্তি অংশ নেন। মানববন্ধন চলাকালীন দস্যুদের পক্ষে ২০-২৫ জনের একটি দলের বাঁধায় মানববন্ধন পণ্ড হয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন মানববন্ধনকারীরা। পরে তারা জেলা প্রশাসক বরাবরা স্মারকলিপি দেন। কালীরচর গ্রামবাসীর পক্ষে কাঞ্চন বেপারীর স্বাক্ষরিত মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপিতে বলা হয়- কালিরচর গ্রামের মৃত আব্দুল খালেক মিয়াজির পুত্র নৌ-ডাকাত গোলাম কিবরিয়া মিয়াজি (৫০) দীর্ঘদিন যাবৎ মুন্সীগঞ্জ সদর থানার চরআব্দুল্লাহ মৌজার কালিরচর গ্রামের আরএস রেকর্ড ভূক্ত জনগনের চাষী জমিগুলো সরাসরি কেটে নিয়ে যাচ্ছে এবং প্রতিদিন পদ্মা-মেঘনা নদী থেকে ২৪ ঘণ্টা ড্রেজার লাগিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। এই নৌ-ডাকাত গোলাম কিবরিয়া মিয়াজি আইনের কোন তোয়াক্কা না করে বালু খেকো, বালু দস্যু, নদী দস্যু ও ভূমি দস্যু নৌ-ডাকাত গোলাম কিবরিয়া মিয়াজী দিনের পর দিন পদ্মা ও মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলিত করতেছে এবং জনগণের রেকর্ড ভূক্ত চাষী জমিগুলো প্রতিনিয়ত কেটে যাচ্ছে। এই এলাকার জমিগুলো শতভাগ অংশই মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় অবস্থিত।
এলাকায় নৌ-ডাকাত গোলাম কিবরিয়া মিয়াজী একজন বড় মাপের সন্ত্রাসী কিলার ভূমি দস্যু নদী দস্যু নদী খেকো হিসাবে পরিচিত আর তার নামে মুন্সিগঞ্জ সদর থানা, মতলব উত্তর থানা ও চাঁদপুর সদর থানাসহ বিভিন্ন থানায় হত্যা ডাকাতি মামলাসহ অন্যান্য অনেক মামলা আছে। মুন্সীগঞ্জের আলোচিত আবু ইলিয়াছ শান্ত হত্যা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলার একজন ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামি। তিনি প্রায় সময় প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দিয়ে থাকেন এবং তিনি প্রায় বলে থাকেন উপরের মহলকে ম্যানেজ করে তিনি এ কাজগুলো করে যাচ্ছেন। কয়েক মাস আগেও এই বালু মহলকে কেন্দ্র করে কালিরচরে তিনজন হত্যা হয়েছে। এলাকার নিরীহ মানুষ নৌ-ডাকাত কিবরিয়া মিয়াজীর ভয়ে আতঙ্কে দিন যাপন করছে। তার ভয়ে কেউই প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না। যখন নদী থেকে ড্রেজিং হয় বা বালু উত্তোলিত হয় তখন এদের সাথে অজ্ঞাত ৬০-৭০ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা পাহারাদার হিসেবে থাকেন । বালু দস্যু ও ভূমি দস্যু গোলাম কিবরিয়া মিয়াজী নৌ-পুলিশের পোশাক নকল করে তার নিজস্ব ৬ টি স্পীড বোর্ডে করে এবং তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ভুয়া নৌ-পুলিশ বানিয়ে পদ্মা ও মেঘনা নদীতে টহল দেন। এতে করে তার অবৈধ বালু উত্তোলনে ঐ ভুয়া নৌ পুলিশের মাধ্যমে তার ব্যবসার অনেক উপকার হয়। তাছাড়া নৌ-ডাকাত গোলাম কিবরিয়া মিয়াজীর নামে মুন্সিগঞ্জ সদর থানা সহ অন্যান্য থানায় ৩টি হত্যা মামলা সহ ৭-৮ টি অন্যান্য মামলা রয়েছে। তাছাড়া জলদস্যু ও বালুদস্যু নৌ-ডাকাত গোলাম কিবরিয়া মিয়াজীর নামে অন্যান্য থানায় আরো মামলা রয়েছে। নৌ-ডাকাত গোলাম কিবরিয়া মিয়াজি গত ২৬ জুলাই গ্রামবাসী মিলে অবৈধ বালু কাটার বিরুদ্ধে বাধা দিতে গেলে গ্রামবাসীর উপর গুলি ছুড়ে। তখন সাংবাদিকরাও ভয়ে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়। এই নৌ-ডাকাত গোলাম কিবরিয়া মিয়াজি এমন কোন বড় ব্যবসায়ী না যে, তিনি ৬টি স্পিড বোর্ড ব্যবহার করতে হবে। কালিরচর গ্রামসহ আশপাশের অন্যান্য গ্রামগুলো পদ্মা ও মেঘনা নদীতে বিলীন হয়ে যাবে এবং কৃষক তার চাষী জমিগুলো হারাবে। তাই আমরা এলাকাবাসীর পক্ষে এই বালু দস্যু নৌ-ডাকাত কিবরিয়া মিয়াজিসহ তার সাথে থাকা অন্যান্য বালু সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সরেজমিনে তদন্ত করে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী করছি। স্মারকলিপিতে উল্লেখিত- অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে গোলাম কিবরিয়া মিয়াজীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।